কবিতা বিক্রির কবিতা - টোকন ঠাকুর

যে যাই বলুক, আমি বিবাহিত
বাতাসি বেগম আমার বউ।
আমাদের সুখের সংসার; যাচ্ছে! বেশ
ঢিলিমিলিই তো যাচ্ছে।
কিন্তু মাঝেমধ্যেই ঝামেলা বাঁধিয়ে দিচ্ছে
আমার পুত্ররা, কন্যারাও। তাদের ভাষ্য-
তারা নাকি দুধেভাতে নেই
আমি অসমর্থ পিতা?
আমি নাকি তন্দ্রা ধরে বলি:
‘এই নে, হাটে নিয়ে বেশি দামে বেঁচে আয়
আত্মায় প্রণীত আমাদের টাটকা কবিতা’

বলেন, একজন স্বায়ত্বশীল, বিবাহিত লোক
এসব বলতে পারে?
কিন্তু আমার পুত্র-কন্যারা এত বেয়াড়া আর
বিপ্লবী যে
ওরা লিভটুগেদার চায়, ওরা ভাইবোনেরাই
দিব্যি অভিসারে...
ফলে, আমার দিব্যভাবনা বাড়ে

সিদ্ধান্তে আসি, আমি ওদের নাম রেখেই কি
ভুল করেছি?
পুত্রদের নাম রেখেছি বাক্য; প্রথমটা প্রথম বাক্য
তারপরেরটা দ্বিতীয় বাক্য, তিন নাম্বারে তৃতীয় বাক্য!
কন্যাদের নাম রেখেছি ওদের মা’র নাম অনুসারেই-
‘হাওয়া’
বড়টা দস্যিহাওয়া, মেঝটা শান্তভারি, তারপর হিমেলহাওয়া
এবং কদিন আগেই যে জন্মেছে, ওর নাম হুহুমনা,
আজকাল তো হুহুমনাহাওয়ার জন্যই আমার এত টান
এত ভালবাসার গান!
কিন্তু প্রণীত বাক্য, মাই সন
এন্ড প্রণীত হাওয়া, মাই ডটার-
আজকাল কারওর আচরণই আমার আর ভালো লাগছে না

চতুর্থ বাক্য ঘরে ফিরছে না পাঁচদিন,
হাওয়াদের মধ্যেও একজনকে পাওয়া যাচ্ছে না;
বধু আমার বাতাসি বেগম পালিয়ে গেছে
অথচ আমি বিবাহিত... অযোগ্য এক পিতা!

আমি নাকি সন্ধ্যা দেখেই বলি:
এই নে, সূর্যাস্তের একটু আগের আকাশ থেকে
পেড়ে আনা, দগ্ধীভূত, লালচে কবিতা;
এটা ঠিকই বিক্রি হয়ে যাবে
গ্রন্থে গ্রন্থে, প্রত্যন্তে-
নিয়ে যা, হাটে নিয়ে যা